আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)
==================হযরত (সঃ) এর শিক্ষার বিশুদ্ধ নৈতিক উপদেশসমূহ তাহার মনে তীব্র অনুভূতি জাগায় । বহু ক্রীতদাস খরিদ করিয়া মুক্তিদান ও অন্যান্য অনুরূপ কার্যদ্বারা তিনি ইহার প্রমাণ দেন । ইসলামের খাতিরে কোন আত্মত্যাগই তাহার নিকট খুব বড় বলিয়া মনে হইত । ইহার ফল এই দাঁড়ায় যে, তাহার ৪০ হাজার দিরহাম মূল্যের সম্পত্তির মধ্যে তিনি মদিনায় মাত্র ৫ হাজার দিরহাম লইয়া যাইতে সমর্থ হন । ভীষণতম বিপদের মধ্যেও তিনি বিশ্বস্ততার সহিত তাহার বন্ধু ও শিক্ষকের পার্শ্বে দন্ডায়ান থাকেন । সর্বাপেক্ষা সংকটময় সময়ে যে অত্যল্প সংখ্যক লোক আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন নাই, তিনি ছিলেন তাহাদের মধ্যে অন্যতম । বানু হাশিমকে মক্কা সমাজ হইতে বহিষ্কৃত করা হইলে তখনকার মত কেবল একবার তিনি বিচলিত হন বলিয়া কথিত আছে । তজ্জন্য তিনি মক্কা ত্যাগ করেন ; কিন্তু জনৈক প্রতিপত্তিশালী মক্কাবাসীর আশ্রয়ে শীঘ্রই ফিরিয়া আসেন । তাহার অই রক্ষক তাহাকে নিঃসঙ্গ অবস্থায় ত্যাগ করিলেও তখনও তিনি মক্কা শহরে অবস্থান করেন । তাহার জীবনের চরম গৌরবের দিন আসে যখন হযরত (সঃ) মদিনায় হিজরত করার সময় তাহাকে স্বীয় সঙ্গী হিসেবে মনোনীত করেন । আল্লাহ্ তাআলা আল-কুরআনে “দুই জনের মধ্যে দ্বিতীয়” (সুরা ৯: আয়াত ৪০) আখ্যায় তাহার নাম অমর করিয়া এই আত্মত্যাগী মহান ভক্তকে পুরস্কৃত করেন । পুত্র আব্দুর রহমান ব্যতীত তাহার পরিবারের অন্যান্য সদস্যও মদিনায় হিজরত করেন; আব্দুর রাহমান কাফির থাকা অবস্থায় বদরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অংশ নেন । পরিশেষে তিনিও ইসলামে দীক্ষিত হইয়া মদিনায় হিজ্রাত করেন । এই নূতন আবাসে আল-সুনুহ্ শহরতলীতে আবু বাকর (রাঃ) অনাড়ম্বর গৃহাস্থালী স্থাপন করেন । হিজ্রাতের পূর্বে ৬২০ খ্রিষ্টাব্দে হযরত(সঃ) তাহার কন্যা আইসার (রাঃ) পাণি গ্রহণ করিয়াছিলেন । এই বিবাহের মাধ্যমে উভয়ের বন্ধন আরো দৃঢ় হয় । আবু বাকর (রাঃ) প্রায় সর্বদাই হযরত (সঃ) এর সঙ্গে থাকিতেন এবং তাহার সমস্ত অভিযানে তিনি তাহার সঙ্গে গমন করেন । পক্ষান্তরে তাহাকে কদাচিৎ সামরিক অভিযানের পরিচালক নিযুক্ত করা হইত । তাবূক অভিযানে তাহার উপর পতাকা ধারণের ভার অর্পিত হয় । কিন্তু নবম হিজরিতে (৬৩১ খৃঃ) হযরত (সঃ) তাহাকে হাজ্জ পরিচালনা করিতে আমীরুল হাজ্জ হিসাবে মক্কায় প্রেরণ করেন । হাদিছের বর্ননানুসারে এই উপলক্ষে আলী (রাঃ) কাফিরদের সহিত সম্পর্কচ্ছেদের আয়াত পাঠ করিয়া শোনান । হযরত (সঃ) অসুস্থ হইয়া পড়িলে তৎপরিবর্তে আবু বাকর (রাঃ) এর উপর মসজিদে নাববির জামা’আতে ইমামাত করার ভার ন্যস্ত হয় । ৮ই জুন ৬৩২ খৃঃ হযরত (সঃ) এর ওফাত হইলে উমার (রাঃ) ও তাহার বন্ধুগণ আবু বাকর (রাঃ) এর এই সম্মানের ভিত্তিতে মুসলিম সমাজের প্রধানরূপে তাহার নাম প্রস্তাব করেন । তিনি কোনরূপেই সমাজে কোন নূতন ধারনা বা নীতির প্রবর্তন করেন নাই । তিনি হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর চতুস্পার্শে যে সকল প্রতিভা সমবেত হন, তাহাদিগকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সমর্থ হন । সরল অথচ দৃঢ় চরিত্র বলে তিনি হযরত (সঃ) এর প্রতিরূপ বলিয়া প্রতিপন্ন হন । সর্বাপেক্ষা কঠিন ও বিপজ্জনক সময়ে নবীন মুসলিম সমাজের পরিচালনা করেন এবং মৃত্যুকালে উহাকে এত মজবুত ও দৃঢ় অবস্থায় রাখিয়া যান যে, উহা শক্তিশালী ও প্রতিভাবান উমার (রাঃ) এর খিলাফাত পরিচালনার পথ সুগম করে ।
==================হযরত (সঃ) এর শিক্ষার বিশুদ্ধ নৈতিক উপদেশসমূহ তাহার মনে তীব্র অনুভূতি জাগায় । বহু ক্রীতদাস খরিদ করিয়া মুক্তিদান ও অন্যান্য অনুরূপ কার্যদ্বারা তিনি ইহার প্রমাণ দেন । ইসলামের খাতিরে কোন আত্মত্যাগই তাহার নিকট খুব বড় বলিয়া মনে হইত । ইহার ফল এই দাঁড়ায় যে, তাহার ৪০ হাজার দিরহাম মূল্যের সম্পত্তির মধ্যে তিনি মদিনায় মাত্র ৫ হাজার দিরহাম লইয়া যাইতে সমর্থ হন । ভীষণতম বিপদের মধ্যেও তিনি বিশ্বস্ততার সহিত তাহার বন্ধু ও শিক্ষকের পার্শ্বে দন্ডায়ান থাকেন । সর্বাপেক্ষা সংকটময় সময়ে যে অত্যল্প সংখ্যক লোক আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন নাই, তিনি ছিলেন তাহাদের মধ্যে অন্যতম । বানু হাশিমকে মক্কা সমাজ হইতে বহিষ্কৃত করা হইলে তখনকার মত কেবল একবার তিনি বিচলিত হন বলিয়া কথিত আছে । তজ্জন্য তিনি মক্কা ত্যাগ করেন ; কিন্তু জনৈক প্রতিপত্তিশালী মক্কাবাসীর আশ্রয়ে শীঘ্রই ফিরিয়া আসেন । তাহার অই রক্ষক তাহাকে নিঃসঙ্গ অবস্থায় ত্যাগ করিলেও তখনও তিনি মক্কা শহরে অবস্থান করেন । তাহার জীবনের চরম গৌরবের দিন আসে যখন হযরত (সঃ) মদিনায় হিজরত করার সময় তাহাকে স্বীয় সঙ্গী হিসেবে মনোনীত করেন । আল্লাহ্ তাআলা আল-কুরআনে “দুই জনের মধ্যে দ্বিতীয়” (সুরা ৯: আয়াত ৪০) আখ্যায় তাহার নাম অমর করিয়া এই আত্মত্যাগী মহান ভক্তকে পুরস্কৃত করেন । পুত্র আব্দুর রহমান ব্যতীত তাহার পরিবারের অন্যান্য সদস্যও মদিনায় হিজরত করেন; আব্দুর রাহমান কাফির থাকা অবস্থায় বদরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অংশ নেন । পরিশেষে তিনিও ইসলামে দীক্ষিত হইয়া মদিনায় হিজ্রাত করেন । এই নূতন আবাসে আল-সুনুহ্ শহরতলীতে আবু বাকর (রাঃ) অনাড়ম্বর গৃহাস্থালী স্থাপন করেন । হিজ্রাতের পূর্বে ৬২০ খ্রিষ্টাব্দে হযরত(সঃ) তাহার কন্যা আইসার (রাঃ) পাণি গ্রহণ করিয়াছিলেন । এই বিবাহের মাধ্যমে উভয়ের বন্ধন আরো দৃঢ় হয় । আবু বাকর (রাঃ) প্রায় সর্বদাই হযরত (সঃ) এর সঙ্গে থাকিতেন এবং তাহার সমস্ত অভিযানে তিনি তাহার সঙ্গে গমন করেন । পক্ষান্তরে তাহাকে কদাচিৎ সামরিক অভিযানের পরিচালক নিযুক্ত করা হইত । তাবূক অভিযানে তাহার উপর পতাকা ধারণের ভার অর্পিত হয় । কিন্তু নবম হিজরিতে (৬৩১ খৃঃ) হযরত (সঃ) তাহাকে হাজ্জ পরিচালনা করিতে আমীরুল হাজ্জ হিসাবে মক্কায় প্রেরণ করেন । হাদিছের বর্ননানুসারে এই উপলক্ষে আলী (রাঃ) কাফিরদের সহিত সম্পর্কচ্ছেদের আয়াত পাঠ করিয়া শোনান । হযরত (সঃ) অসুস্থ হইয়া পড়িলে তৎপরিবর্তে আবু বাকর (রাঃ) এর উপর মসজিদে নাববির জামা’আতে ইমামাত করার ভার ন্যস্ত হয় । ৮ই জুন ৬৩২ খৃঃ হযরত (সঃ) এর ওফাত হইলে উমার (রাঃ) ও তাহার বন্ধুগণ আবু বাকর (রাঃ) এর এই সম্মানের ভিত্তিতে মুসলিম সমাজের প্রধানরূপে তাহার নাম প্রস্তাব করেন । তিনি কোনরূপেই সমাজে কোন নূতন ধারনা বা নীতির প্রবর্তন করেন নাই । তিনি হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর চতুস্পার্শে যে সকল প্রতিভা সমবেত হন, তাহাদিগকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সমর্থ হন । সরল অথচ দৃঢ় চরিত্র বলে তিনি হযরত (সঃ) এর প্রতিরূপ বলিয়া প্রতিপন্ন হন । সর্বাপেক্ষা কঠিন ও বিপজ্জনক সময়ে নবীন মুসলিম সমাজের পরিচালনা করেন এবং মৃত্যুকালে উহাকে এত মজবুত ও দৃঢ় অবস্থায় রাখিয়া যান যে, উহা শক্তিশালী ও প্রতিভাবান উমার (রাঃ) এর খিলাফাত পরিচালনার পথ সুগম করে ।
No comments:
Post a Comment