Saturday 14 June 2014

শব'বারাআত কী

“শব” শব্দটা ফার্সি। যার অর্থ হল-রাত। আর বরাআত এটি আরবী শব্দ। মূলত হল-براءت যার অর্থ হল “মুক্তি” তথা জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত হল শবে বারাআত। বরাত বলাটা ভুল। কারণ শবে বরাত (برات) মানে হল বিয়ের রাত। সুতরাং আমরা বলব-শবে বারাআত ( ( شب براءت
শবে বারাআতকে হাদিসের পরিভাষায় বলা হয়েছে “লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান”(ليلة النصف من شعبان) তথা শাবানের অর্ধ মাসের রাত। কেউ কেউ “শবে বরাআত” নামে হাদিসে শব্দ না থাকায় এ রাতকে অস্বিকার করার মত খোড়া যুক্তি দিয়ে থাকেন। তাদেরকে আমি বলি-আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়া আবশ্যক বলি কুরআন হাদিসে বর্ণিত নির্দেশের কারণে।
কিন্তু কুরআন হাদিসের কোথাও কি নামায শব্দ আছে? তাওহীদ কে আমরা ঈমানের শর্ত বলি। কিন্তু কুরআন হাদীসের কোথাও তাওহীদ শব্দ নেই। তাই বলে কি তাওহীদ কুরআন হাদীস দিয়ে প্রমাণিত নয়? আমরা যাকে নামায বলি সেই অর্থবোধক কুরআন হাদিসের উদ্ধৃত শব্দ “সালাত”ই হল নামায। আমরা যাকে তাওহীদ বলি কুরআন হাদীসের একত্ববাদ প্রকাশক সকল শব্দই হল এ তওহীদ।
তেমনি আমরা যাকে “শবে বারাআত” বলি।
তথা শাবানের পনের তারিখের রাত বলে থাকি।
এই অর্থবোধক শব্দ হাদিসে পাওয়া গেলে তা’ই হবে শবে বারাআত।
আর এই অর্থবোধক হাদীসে বর্ণিত শব্দ হল “লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান”।
সুতরাং তাই হল শবে বারাআত।

Thursday 12 June 2014

শাবানের মধ্যরাত্রি অর্থাৎ শবে বরাত সম্পর্কিত হাদিসে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম...

১) হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কে রাতে আমার সাথে বিছানায় না পেয়ে বাইরে তালাশ করতে বের হয়ে ওনাকে জান্নাতুল বাক্বীতে পেলাম। তিনি বললেনঃ তুমি কি মনে করেছো আল্লাহ ও তাঁর রসূল তোমার সাথে আমানতের খিয়ানত করেছেন? আমি বললামঃ ইয়া রসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ধারনা করেছিলাম যে, আপনি হয়তো আপনার অন্য কোন আহলিয়ার হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক শা'বানের ১৫ তারিখ রাতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন। অতঃপর তিনি বণী কালবের মেষের গায়ে যত পশম রয়েছে তার চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন।
১। তিরমিযী শরীফঃ ৭৩৯, ২। নাসায়ীঃ জানাজা অধ্যায়; ২০৩৭, ৩। ইবনে মাজাহঃ ১৩৮৯, ৪। মুসনাদে আহমদঃ ২৫৪৮৭, ৫। সুনানে বাইহাকীঃ ১/১২৭, ৬। মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ১/২৮৮, ৭। শুয়াবুল ঈমানঃ ৩৮২৬।

২) হযরত আবু মুসা আশয়ারী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ননা করেন, আল্লাহ পাকের হাবীব হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক শা'বান মাসের ১৫ তারিখ রাত্রিতে ঘোষনা করেন যে, ওনার সমস্ত মাখলুকাতকে ক্ষমা করে দিবেন। শুধু মুশরিক ও হিংসা-বিদ্বেষকারী ব্যতীত।
১। ইবনে মাজাহঃ ১৩৯০, ২। নাসায়ীঃ জানাজা অধ্যায়।
৩) হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ননা করেন, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন অর্ধ শা'বানের রাত অর্থাৎ শবে বরাত উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাতে সজাগ থেকে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনের বেলায় রোযা রাখবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উক্ত রাতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন (রহমতে খাছ বান্দাহর নিকটবর্তী করেন)। অতঃপর ঘোষাণা করতে থাকেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি ক্ষমা করে দিব। কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। কোন মুছিবগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিব। এভাবে সুবহে ছাদিক তথা ফজর পর্যন্ত ঘোষাণা করতে থাকেন।
ইবনে মাজাহঃ ১৩৮৮